একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাসকারী এবং পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়াশীল (interacting) সকল জীবগোষ্ঠীকে সম্মিলিতভাবে জীবসম্প্রদায় বলে। অর্থাৎ জীব সম্প্রদায় বলতে একটি বাস্তুতন্ত্রের সম্পূর্ণ জীবন্ত অংশকে সব উদ্ভিদ, সব প্রাণী ও সব অণুজীব) বোঝায়। তবে সংকীর্ণ দৃষ্টিতে কোনো এলাকার জীবগোষ্ঠীকে শৈবাল সম্প্রদায়, ফার্ণ সম্প্রদায়, ব্যাঙ সম্প্রদায়, পতঙ্গভুক বা পাখি সম্প্রদায় প্রভৃতি উপায়েও ভাগ করা যায় ।
জীবসম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যঃ
১. প্রজাতি বৈচিত্র্য (Species diversity) : একটি জীবসম্প্রদায়ে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীব বাস করে। এবং প্রজাতি বৈচিত্র্য প্রদর্শন করে। জীবসম্প্রদায়ে প্রজাতির সংখ্যা ও জীবগোষ্ঠীর প্রাচুর্যেও ব্যাপক তারতম্য দেখা যায়।
২. জীবের আকার ও গঠন (Growth form and structure) : একটি জীবসম্প্রদায়ের প্রধান জীবগোষ্ঠীগুলোকে বিভিন্নভাবে আখ্যায়িত করা হয়, যেমন-শৈবাল, তৃণ, গুলা, বৃক্ষ ইত্যাদি। এ ধরনের প্রত্যেক জীবগোষ্ঠী বিভিন্ন উদ্ভিদ নিয়ে গঠিত। যেমন-বৃক্ষ, এক্ষেত্রে উদ্ভিদগুলো চিরসবুজ, পাতাঝরা, চওড়া পাতাধর প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের হতে পারে। এভাবে বিভিন্ন জীবগোষ্ঠী একটি জীবসম্প্রদায়ের গাঠনিক ধরনকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. প্রাধান্য (Dominance) : কোনো জীবসম্প্রদায়েই সকল প্রজাতি সমান প্রাধান্য বিস্তার করে না। কয়েকটি মাত্র প্রজাতি আকৃতি, সংখ্যা বা কর্মকান্ডের মাধ্যমে জীবসম্প্রদায়ের প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণে প্রভাব বিস্তার করে ।
৪. ক্রমাগমন (Succession) : প্রত্যেক জীবসম্প্রদায়ের নিজস্ব ক্রমবৃদ্ধির ইতিহাস থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিকমুখী পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি জীবসম্প্রদায় গড়ে উঠে।
৫. আপেক্ষিক প্রাচুর্য (Relative abundance) : একটি জীবসম্প্রদায়ে বিভিন্ন জীবগোষ্ঠী আপেক্ষিক অনুপাত অনুযায়ী উপস্থিত থাকে।
৬. খাদ্যস্তরীয় গঠন (Tropic structure) : জীবসম্প্রদায় প্রজাতিগুলোর মধ্যে খাদ্য গ্রহণজনিত সম্পর্কের ফলে উদ্ভিদ থেকে তৃণভোজী, তৃণভোজী থেকে মাংসাশী খাদকে শক্তি প্রবাহ নির্ধারিত হয়।